বিবি নিউজ ডেস্ক:-
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কয়েক ঘণ্টা পর মারা যাওয়া ইউক্রেনের তরুণী দারিয়া কোতসারেঙ্কোর (২৯) নামে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মসজিদটি নির্মাণ করা হবে। সেখানে ওই তরুণী প্রবাসী হয়ে বসবাস করছিলেন।
খালিজ টাইমসের শুক্রবারের এক প্রতিবেদনে এরকম বলা হয়, দারিয়ার ধর্মভীরুতার প্রতি সম্মান জানাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে মসজিদটির নকশা সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। বিস্তারিত পরিকল্পনা জানিয়ে অনুদান তোলাও শুরু হয়ে গেছে।
এমনটি জানা যায় যে দার আল বের সোসাইটির ইসলামিক ইনফরমেশন সেন্টারে গিয়ে গত ২৫ মার্চ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন দারিয়া। তাঁর আকস্মাত মৃত্যুতে সোসাইটি জানায় যে তার নামে মসজিদ নির্মাণ করবে।
তাদের তথ্য অনুযায়ী, দুবাইয়ে হতে যাওয়া মসজিদটি ৮১২ বর্গমিটার প্লটে নির্মাণ করা হবে। মসজিদটিতে পুরুষ ও নারীদের আলাদা নামাজের স্থান থাকবে। তেমনি ওজুর স্থানও নারী-পুরুষের জন্য পৃথক হবে। এমনকি ইমামের থাকার জন্য ঘর নির্মাণ করা হবে এই মসজিদে। থাকবে দৃষ্টিনন্দন মিনার। মিনারটির উচ্চতা হবে ৩৩ মিটার।
আরও পড়ুন- বাইডেনের ইফতারের আমন্ত্রণ ফেরালেন মুসলিমরা
এর আগে গত শুক্রবার (২৯ মার্চ) আল কাসাইস কবরস্থান মসজিদে ওই তরুণীর জানাজা হয়। এতে শত শত মানুষ অংশ নেন। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
সে সময়ও গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে খালিজ টাইমসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম। তাতে জানানো হয়, মৃত্যুর সময় দারিয়া রোজাদার ছিলেন। পরে তার জানাজায় মানুষের ঢল নামে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়েই তিনি মারা যান। দারিয়া দুবাইয়ে একা থাকতেন। সেখানে তার কোনো স্বজন ছিলেন না।
একটি চাকরি হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন তিনি। এ জন্য স্থানীয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট অনুসরণ করছিলেন। এ থেকেই ইসলামের বিভিন্ন বিষয় তার নজরে আসে এবং মহান এ ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি।
এ তরুণী জন্মসূত্রে খ্রিষ্টান ছিলেন। ২৫ মার্চ তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এরপর রোজা রাখেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর তার মৃত্যু হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। ‘জানাজা-ইউএই’ নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে এসব প্রচার করা হয়। ওই অ্যাকাউন্ট থেকেই তার জানাজায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। পরে ব্যাপক মুসল্লির উপস্থিতির বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায়, আরবরা ছাড়াও প্রবাসী মুসলমানরা জানাজায় অংশ নেন।
নওমুসলমানদের প্রতি এ ধরনের সংহতি জানানো আরব আমিরাতে নতুন কোনো বিষয় নয়। উদাহরণ হিসেবে এমন শোনা যায় যে, লুইস জেন মিচেল নামে ৯৩ বছর বয়সী এক নারী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি ২০২২ সালের নভেম্বরে ছেলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতে থাকাবস্থায় মারা যান।
ওই সময়ও এ নারীর ইসলাম ধর্ম গ্রহণের খবর দিয়ে ‘জানাজা-ইউএই’সহ বেশকিছু অ্যাকাউন্ট থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ধর্মান্তরের গল্প এবং জানাজার ঘোষণা দেওয়া হয়।
ওই পোস্ট স্থানীয়দের আবেগাপ্লুত করে। শত শত মুসলমান আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তার জানাজার নামাজে অংশ নেন। এদিকে দারিয়ার নামে মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাবে ব্যাপক সাড়া মিলছে। স্থানীয় আরবরা সওয়াব লাভের আশায় দানে অংশ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন- ইস্তেহার প্রকাশ করলো কংগ্রেস, নতুন এস্তেহার জানলে চমকে উঠবেন
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যার মধ্যেই মোট বাজেটের ১৩ শতাংশ অনুদান পেয়েছে দার আল বের সোসাইটির ইসলামিক ইনফরমেশন সেন্টার। তারা জানিয়েছে, আজও অনেকে দান করছেন। অনেকে মোটা অংকের অর্থ দানের প্রস্তুতি দিয়েছেন। শিগগিরই সেসব অর্থ তাদের হাতে আসবে।
মসজিদকে আল্লাহর নিজের ঘর হিসেবে সম্মান করা হয়। ইসলাম ধর্মে মসজিদ নির্মাণ সওয়াবের কাজ। কোনো মুসলমান যদি মসজিদ নির্মাণে অংশ নেন তাহলে ওই মসজিদে যত দিন ইবাদত করা হবে, তিনি সওয়াব পাবেন। এ ছাড়া জান্নাতে তিনি বিশেষ প্রতিদান পাবেন বলেও ইসলামে প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ