বিবি নিউজ ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের গাজায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য এবং সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। খুব শিগগিরই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পরিকল্পনাও করছে প্রতিষ্ঠানটি।
একটি বিশেষ সূত্রের বরাত দিয়ে ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল এ খবর নিশ্চিত করেছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আশঙ্কায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন বলেও সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইসিসির এই পদক্ষেপ ঠেকাতে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে নেতানিয়াহু তার কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকে তার বিশেষ যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন, কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এবং বেশ কয়েকজন সরকারপন্থী আইনজীবী ও আইন বিশেষজ্ঞ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালিনা বিয়ারবক বুধবার (১৭ এপ্রিল) জেরুজালেম সফর করেন। তাদের সঙ্গে বৈঠকে নেতানিয়াহু আইসিসির সম্ভাব্য গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়েও কথা বলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এই পদক্ষেপ ঠেকাতে তিনি ব্রিটিশ ও জার্মান সরকারের সহযোগিতাও চেয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার অধীনে চার ইসরায়েলি ব্যক্তি এবং দুটি সংস্থা
প্রসঙ্গত, 2014 সালে, হামাস এবং ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছিল। 2019 সালে, আইসিসি সেই যুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত শুরু করার ঘোষণা দেয়। পরে করোনা মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর তদন্ত কাজ বন্ধ থাকে। যাইহোক, 23 মার্চ, 2021 আইসিসি আবার তদন্ত শুরু করে।
সেই তদন্তের অংশ হিসেবে গত বছরের ডিসেম্বরে আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান ইসরাইল সফর করেন। কিন্তু ইসরায়েলি প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর আপত্তির কারণে তিনি গাজা সফরে যেতে ব্যর্থ হন। সেই সফর শেষে ফিরে আসার আগে করিম খান বলেছিলেন যে 7 অক্টোবর, 2023-এ হামাসের আক্রমণ এবং ইসরায়েলি বাহিনীর প্রতিক্রিয়া কোনও কাকতালীয় নয়।
তিনি আরো বলেন, গাজায় যে সহিংসতা হয়েছে তা এখনো হচ্ছে। করিম খান বিশ্বাস করেন যে এই সহিংসতাগুলি হামাস এবং আইডিএফ দ্বারা পূর্ব পরিকল্পিত। এমনকি এ বিষয়ে তার কাছে কিছু প্রমাণ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে, অবরুদ্ধ গাজায় ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নির্বিচার হামলা ও অভিযানে অন্তত ৩৪,০০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ৭৬ হাজার ৮৩৩ জন। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ৪২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও ৬৩ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন- রাজ্যে নতুন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বড় দাবি করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু
0 মন্তব্যসমূহ