বিবি নিউজ ডেস্ক:-
ম্যানেজমেন্ট নিযুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষাদপ্তরেই মতানৈক্য। বেশ কিছুদিন বাংলার সমস্ত মানুষ প্রায় জেনে গিয়েছিলেন যে ম্যানেজমেন্ট নিযুক্ত শিক্ষকদের বিষয় সমাপ্ত হয়েছে। ডিরেক্টর অফ মাদ্রাসা এডুকেশন সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী খারিজ করে বেতনের আবেদন। এরপর ফের সুপ্রিম কোর্টেএকাধিক মামলা হয়। কিছু ম্যাটার নিস্পত্তি হয় ও কিছু ম্যাটার এডভোকেটরা ডিফেক্টিভ ম্যাটার করে ফেলে রাখে।
সুপ্রিম কোর্ট দেবিপ্রসাদ দের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের কমিটির রিপোর্ট ওয়েবসাইটে আপলোড করতে বলে। যারা মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগের বৈধতা বিচার করার দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সেই মুতাবেক মাদ্রাসা শিক্ষাদপ্তর মামলার রায় আসার আগেই অবজারভেশন ও একটা রেজুলেশন আপলোড করে।
মজার ব্যাপার হলো অবজারভেশনকে রিপোর্ট হিসাবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত মান্যতা দেয়নি। কারণ আর,টি,আই করে অবজারভেশন নিয়ে সেটাকেই এনেক্সার করে মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। আদালত তার পরে রিপোর্ট আপলোড করতে বলে। কিন্তু শিক্ষাদপ্তরের কাছে রিপোর্ট নেই বলেই খবর।
এবার পাল্টা মাদ্রাসা শিক্ষাদপ্তরের ভিতরে আলোচিত বিষয় অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ তুলে এফ,আই,আর করে বড় ধরনের তদন্তের আওতায় আনা যায় কিনা। আবার কেও তার বিরোধী বলেই সুত্রের খবর।
ইতিমধ্যেই বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরাম মালদা ও মুর্শিদাবাদের ভুতুড়ে শিক্ষকদের তথ্য দিয়ে সিআইডি বা সিবিআই তদন্তের দাবি করছে। মুলত: দুই জেলায় ম্যানেজমেন্ট নিযুক্ত অথেনটিক শিক্ষক ১০ জনের মতো। বাকি সব ভুতুড়ে বলেই জানা যাচ্ছে। কালামাটি থেকে জেএইচআর অভিযোগের পাহাড়। কালামাটির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ সহ ব্যাকডেট এপয়েন্টমেন্টের অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আবার জেএইচআরের প্রধান শিক্ষক দায় এড়িয়ে গিয়েছেন।
বাটনা ও ভগবানপুরেও একই অভিযোগ। সবচেয়ে বড় অভিযোগ এখানে ভিন্ন জেলার দালালচক্র এই নিয়োগ স্কামে যুক্ত।
আর্টিকেল ৩০ মামলার জনক হলো কন্টাই ম্যানেজমেন্ট। যারা দীর্ঘদিন মামলা লড়ে আসছে। যত বেতন হয়েছে সবটাই কন্টাই ম্যানেজমেন্ট এর দ্বারাই। ব্যতিক্রম একটা মাদ্রাসা পশ্চিম মেদিনীপুরে। যার মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে, তদানীন্তন জেলার ডি,আই এর কৃপায় বেতন চালু হয়। কিন্তু এরিয়ার এর দাবী থেকে তারা সরে আসে।
কারণ ওই মাদ্রাসার রিকগনিশন ছিলনা বলেই সরকার দাবি করে। এবার সেই মাদ্রাসার বেতন বন্ধের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞ আইনজীবীদের দাবী উক্ত মাদ্রাসার বেতন বন্ধ করলে আর বেতন চালু হবেনা।
আর্টিকেল ৩০ মামলার কন্টাই ম্যানেজমেন্ট এর এডভোকেট আবু সোহেল বিবি নিউজকে জানান। তাদের দৃষ্টিতে ম্যানেজমেন্ট নিযুক্ত শিক্ষক ১৭২ জনের মতো। তার মক্কেল নির্ভেজাল তাদের বেতন কেও আটকাতে পারবেনা।
তিনি তার মক্কেলদের বেতনের জন্য সর্বোচ্চ লড়াই দিয়ে বেতন করবেন বলে আশাবাদী। চলতি মাসেই ব্রেকিং নিউজ দিতে পারবেন বলে আশাবাদী। তার আরো দাবি সরকার অবজারভেশনকেই সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট হিসাবে দাবি করতে পারে। আবার তারা এড়িয়ে যেয়ে তিন সদস্যের কমিটির উপরেই দায়ভার চাপিয়ে দিতে পারে। কিন্তু তাতে লাভ হবেনা তাদের।
দালালচক্রের কথা বলতেই তার সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া - যারা নিজেদের বেতন করতে পারেনি তারা কিভাবে অপরের বেতন করবে?
এদিকে দালালরাজের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে বীতশ্রদ্ধ ম্যানেজমেন্ট নিযুক্ত শিক্ষকদের একাংশ। তাদের মিথ্যা কথা বলে দিল্লির গল্প ও মামলার গল্প শুনানো হচ্ছে বলেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক শিক্ষকের অভিযোগ। দু এক মাসে এক দুইটা পাতি মামলা করে ডিফেক্টিভ ম্যাটার করে ফেলে রেখে ক্ষোভ সামলাতে চেষ্টা চলছে বলেই অভিযোগ।
সব মিলিয়ে জীবনযুদ্ধে ম্যানেজমেন্ট নিযুক্ত শিক্ষকরা একদিকে অর্থ শেষ করেছে। অন্যদিকে ভুতুড়েদের কারণে তাদের পথ রুদ্ধ হচ্ছে। তার সাথে মামলার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন টানতে টানতে বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হওয়ার জোগাড়। এভাবে চললে হয়তো জীবন শেষ হবে কিন্তু সুদিনের অপেক্ষা শেষ হবেনা। আশার আলো কেবল কন্টাই ম্যানেজমেন্ট ও এডভোকেট আবু সোহেল।
0 মন্তব্যসমূহ