দ্বীন ইসলাম গাজী, বিবি নিউজ :- পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম মুসলিম ধর্মীয় সংগঠন "অল ইন্ডিয়া সুন্নাত ওয়াল জামায়াত।" অর্থনৈতিক সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মুসলিমদের উন্নয়নে বিপ্লবী কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে তারা।
বিশেষ করে নারীশিক্ষা ও অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মুসলিমদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার আঙিনায় আনতে বদ্ধপরিকর তারা। ইতিমধ্যেই চিরাচরিত ধর্মীয় শিক্ষা সাথে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রথাগত শিক্ষার সমন্বয় রেখে বহু গার্লস মাদ্রাসা ও কেরালা মডেলের ৮০ টির ও অধিক স্কুল বানিয়েছেন তারা।
ভারতবর্ষের শিক্ষায় এগিয়ে কেরল সেই কেরলের মডেল চালু করার উদ্দেশ্য তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। মুসলিম সমাজের বহু ছেলে মাদ্রাসায় পড়ছে কিন্তু তারা ডাক্তার, মাস্টার, ইঞ্জিনিয়ার, পুলিশ, সেনাবাহিনী সহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিযোগিতার কাতারেই যেতে পারছেনা।
সেটা প্রথাগত শিক্ষা ঠিকঠাক ভাবে না হওয়ার জন্য। মুসলিম ঘরের ছেলেরা ধর্মীয় শিক্ষার সাথে ডাক্তার, মাস্টার হোক, অফিসার হোক। তবেই তো মুসলিমদের অর্থনৈতিক দৈন্যদশা কাটবে। সেটাই কেরালা মডেলের উদ্দেশ্য।
নারীশিক্ষা সমাজে বিপ্লব আনে। একজন সৎ শিক্ষিতা আদর্শবান নারী যে পরিবারে যায় সে পরিবার পরিবর্তন হয়। বিশেষ করে পরবর্তী জেনারেশন পরিবর্তন হয় আদর্শবান মায়ের দ্বারা। সাথে মেয়েরা রান্নার জগতের বাইরে তারাও কাজের জগতে শালীনতা বজায় রেখে কাজ করতে পারে। কিন্তু সেটা হবে ধর্মীয় অনুশাসনের নিয়ন্ত্রনাধীন। তেমন নারী তৈরি করাই মৌলানা আব্দুল মাতিনের স্বপ্ন। তিনি স্বপ্ন দেখেন তার এই শিক্ষা আন্দোলন তখনই স্বার্থক হবে যখন অসুস্থ হলে হাসপাতালের নার্স সেবা করবে সে বলবে আমি কেরালা মডেলের ছাত্রী।
অল ইন্ডিয়া সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ওয়াজ মাহফিলের চেয়েও গুরুত্ব দিচ্ছে শিক্ষাকে। ছোটো থেকে ধর্মীয় শিক্ষাপ্রদান করলে নব প্রজন্মকে ওয়াজ করা লাগবেনা বলেই মনে করেন অল ইন্ডিয়া সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের কর্ণধার। তিনি চাইছেন একজন ছেলেও যেন স্কুল ছুট না হয়। অভিভাবকদের বলেছেন নিজে না খেয়ে হলেও শিক্ষাটা থেকে বাচ্চাকে বঞ্চিত করা যাবেনা
স্যার সৈয়দ আহমদ যখন সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে মুসলিম জাতির এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তখন কাফের ফতোয়া দিয়েছিল দেশের কিছু মৌলভী। তেমনই দিনরাত পরিশ্রম করে নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে এমন মহৎ কাজ করলেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সামনে পড়তে হচ্ছে তাকে। এই মডেল চালু করায় ফুরফুরা সিলসিলার কয়েকজন ওয়ায়েজিন নিত্যদিনই তাকে নিন্দামন্দ করছেন। তবে তিনি এসব নিয়ে ভাবিত নন।
কেরালা মডেল চালু হওয়ার যেমন কয়েক হাজার হাজার ছেলেমেয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে পড়াশোনা করছে। তেমনই শতশত ছেলের কর্মসংস্থান ও হয়েছে। তবে উত্তর ২৪ পরনায় যেভাবে শিক্ষা আন্দোলন শুরু হয়েছে কয়েক বছর পরে তা যে বিপ্লব আনবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাই তিনি বলেন- জীবন খাতার প্রতি পাতায় লিখে যাব আলপনা। আমার লেখা কইবে কথা, যেদিন আমি থাকব না। আব্দুল মাতিন সাহেবের শ্রম যে সমাজে বিপ্লব আনবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
0 মন্তব্যসমূহ