বিবি নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘদিন গাজার নিরীহ মানুষের উপর ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ উঠলেও নির্বিকার ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কারণ ইসরায়েলের মিত্রশক্তি তারা। কিছুদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট গাজায় নিরীহ জনগণের মৃত্যুতে প্রশ্ন তুলে দেন।
এবার যুদ্ধের পরে গাজায় কীভাবে সুশাসন আনা যাবে ও গাজাকে সুরক্ষিত রাখা যাবে, সেই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে মধ্যপ্রাচ্য সফরে গেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
জানা যাচ্ছে প্রথমে সৌদি আরব মিশরে আরব নেতাদের সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আলোচনা করবেন। যাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে ‘অ্যান আর্কিটেকচার ফর লাস্টিং পিস’, অর্থাৎ সেখানে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে একটি কাঠামো তৈরির চেষ্টা করা হবে। এবারের আলোচনার মূল বিষয়বস্তুও এটি।
এই উদ্যোগ এমন সময়ে নেওয়া হল, যখন প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের চারপাশে অভিযান বাড়িয়েছে, এমনকি তারা বেশ কয়েকটি বিমান হামলাও চালিয়েছে। এর আগে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছিল যে তারা সোমবার থেকে সেখানে ৯০ জন বন্দুকধারীকে হত্যা করেছে। গাজায় এই মুহুর্তে ১১ লাখ মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
এদিকে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির জন্য কাতারে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে। তবে কিছু বিষয় দেখে বোঝা যাচ্ছে যে একটা অগ্রগতি আসন্ন।
গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই অঞ্চলে এটি মি ব্লিঙ্কেনের ষষ্ঠ সফর। বিমান থেকে নামার পর সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাজিন আল-হিমালি সহ অপেক্ষমান কর্মকর্তারা তাকে অভ্যর্থনা জানান এবং আলিঙ্গন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন যে তারা একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ও গাজায় চলমান মানবিক সংকটের মাঝে সেখানে ত্রাণ বিতরণ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করবেন।
এই সপ্তাহে জাতিসংঘ-সমর্থিত ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি)-এর একটি খাদ্য নিরাপত্তা জরিপ বলছে যে গাজার এক দশমিক এক মিলিয়ন, অর্থাৎ ১১ লাখ মানুষ ভয়ানক ক্ষুধা ও অনাহারের সাথে লড়াই করছে। সংস্থাটি আরও বলেছে যে আগামী মে মাসের মাঝে গাজার উত্তরাঞ্চলেও একটি মানব সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ আসতে চলেছে।
এছাড়াও মি. মিলার যোগ করেন, "পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচ্যসূচীতে আরও থাকবে গাজার জন্য সংঘাত পরবর্তী পরিকল্পনার সমন্বয়, এটি নিশ্চিত করা যে হামাস আর গাজাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে বা সাতই অক্টোবরের হামলার আর পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারবে না, ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য একটি রাজনৈতিক সমাধান, দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপন এবং এই অঞ্চলের নিরাপত্তা।”
0 মন্তব্যসমূহ