Header Ads Widget

বি বি নিউজ
বাংলা খবর সবার আগে

মাদ্রাসা ম্যানেজমেন্ট নিযুক্ত শিক্ষকদের কি আদৌ বেতনের সম্ভাবনা আর আছে?

madrasah teacher recruitment



দ্বীন ইসলাম গাজী, বিবি নিউজ ৩৬৫:- প্রায় সাড়ে পাচ শত ছেলেদের আশাভরসা সব কি শেষ? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শিক্ষক মহলে বারবার। 

২০১৫ সালের শেষ দিকে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু সরকারি মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগ করে। সেই শিক্ষকদের বেতন নিয়ে বহু মামলা হয়েছে। শেষ ঘটনা হলো- দেশের সর্বোচ্চ আদালত তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। সেই কমিটি অবজারভেশন দেওয়ার পর ডিরেক্টর অফ মাদ্রাসা এডুকেশন সকলের চাকরি খারিজ করা হয়।

এরপর অনেকেই ধরে নেন আর বেতন হবেনা দীর্ঘদিন বেকার খাটা অসহায় ছেলেদের। ম্যানেজমেন্ট নিযুক্ত শিক্ষকরা অনেকেই মাদ্রাসা ছেড়ে দিয়েছেন।

এরপর আসলো সবচেয়ে মজার ব্রেকিং, কিউরেটিভ পিটিশন দায়ের করেন এডভোকেট আবু সোহেল সাহেব। ৬ ই জানুয়ারি  ২০২০ সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও উদয় উমেশ ললিত রায় দান করেন। সেই রায়ে বলা হয় মাদ্রাসা গুলো সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠান কিন্তু সার্ভিস কমিশন নিয়োগ ক্ষমতা পাবে। 

আর মামলা রায়দান পর্যন্ত যে সকল মাদ্রাসা নিয়োগ দিয়েছিল তা ভ্যালিড। কিন্তু সরকার বারবার ভ্যালিড মানতে চায়নি আজও পর্যন্ত। এদিকে এই রায়ে সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণ হয়েছে বলেই কন্টাই মাদ্রাসা ম্যানেজমেন্ট মনে করে। সেজন্য কিউরেটিভ পিটিশন দায়ের করেন। যা ১৭ই জানুয়ারি শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। তার রায়দান দীর্ঘদিন কেটে গেলেও হয়নি এখনো। 

কিউরেটিভ এলাও হলে কি হবে? 

কিউরেটিভ এলাও নিয়ে এডভোকেট আবু সোহেল সাহেব ১০০% আশাবাদী। সাথে এই মামলার আর এক এডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিন সাহেব ও ১০০% আশাবাদী কিউরেটিভ এলাও সময়ের অপেক্ষা। এই মামলা এলাও হলে বিগত যত রায় পক্ষে বিপক্ষে সবরায় অকার্যকর হয়ে যাবে। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে। বেতনের দরজা খুলে যেতে পারে ম্যানেজমেন্ট নিযুক্ত অথেনটিক শিক্ষকদের জন্য। 

অন্য মামলায় কি বেতনের অর্ডার আর সম্ভাবনা নেই? 

হ্যা আছে! আজউ সেই মামলা আছে। কিন্তু আদালত গ্রহণ করবে কিনা সেটাই বড় প্রশ্নচিহ্ন। কারণ তিন সদস্যের কমিটি গঠন হয়েছিল উভয় পক্ষের সম্মতিতে। যারা শিক্ষকদের অবজারভেশন করেছেন প্রভাবিত হয়েই। কারণ যারা বেতন বিরোধী তাদের রুমে বসে তাদের খেয়ে কতটা নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছিলেন তা সন্দেহাতীত নয়।

এক্ষেত্রে আদালতের নজরে বিশেষ বিষয় আনা হয়েছে মাত্র একটা পিটিশনে। সেটি হলো- কন্টাই ম্যানেজমেন্ট আর,টি,আই করলে উত্তর দেওয়া হয় সম্পুর্ণ রিপোর্ট ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। কিন্তু গোলাম মহিউদ্দিন সাহেবের অরটি আইতে চাঞ্চল্যকর এক রিপোর্ট চলে আসে। ডিরেক্টর অফ মাদ্রাসা এডুকেশন জানাচ্ছে রিপোর্ট তার কাছে নেই। এছাড়া বহু রিপোর্ট এর অসম্পূর্ণ তথ্য দেয় মাদ্রাসা ডিপার্টমেন্ট। 

আরো মজার বিষয় হলো- বহু মাদ্রাসা তাদের স্কুল হাজিরা, ওয়ার্কডান সার্টিফিকেট দেওয়া হলেও তাদের বলা হচ্ছে যে এরা স্কুলে কাজ করে না। 

২০১৬ সালের গাইডলাইন হিসাবে কেবলমাত্র কোয়ালিফিকেশন দেখার অন্তর্বর্তীকালীন এক রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল। কিন্তু কন্টেম্পট পিটিশন রায়ে ম্যানেজমেন্ট এডভোকেটরা সেই বিষয়টি জানাতে পারেনি সঠিক ভাবে। সেজন্য বিজ্ঞাপন থেকে বিভিন্ন জিনিস শর্ত হিসেবে চলে আসে। এটা আদালতের দৃষ্টিতে আনা হচ্ছে।

আরো একটা বিষয় সেটি হলো- যে হেডমাস্টার বা টি আই সি ওয়ার্কডান সার্টিফিকেট দিয়েছেন। তারপরেও কমিটির আংশিক অবজারভেশনে লেখা হয়েছে হেডমাস্টার বলেছে এরা কাজ করেনা, এটা আশ্চর্যজনক। এই পয়েন্ট গুলো যদি আদালত শোনে তাহলে মামলা দাঁড়িয়ে যেতে পারে। কারণ যে কমিটি কোর্ট গঠন করেছিল সেই কমিটি সঠিক ভাবে কাজ করেনি। 

এই মামলা দাঁড়িয়ে গেলেও যদি কিউরেটিভ এলাও হয় তাহলে এইসব মামলা অকার্যকর হয়ে যাবে। 

ম্যানেজমেন্ট নিযুক্ত শিক্ষকদের এখনো বহু জায়গা আছে বেতনের সম্ভাবনার। কন্টাই ম্যানেজমেন্ট আপাতত কিউরেটিভ, আলিগড় মামলা ও উত্তর প্রদেশের চ্যালেঞ্জিং মামলার দিকে তাকিয়ে। এগুলোর একটা এলাও হলেই কাজ শেষ । অনেকে ভাবছেন মাদ্রাসা শিক্ষাদপ্তর বেতন খারিজ করেছে মানেই শেষ। তা কিন্তু নয় ওটা চলার পথের একটা বিলম্ব মাত্র। 

যেটা নেগেটিভ পয়েন্ট সেটি হলো -বেতন খারিজের পর মাদ্রাসা শিক্ষকদের অনেককে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। সেজন্য নিরবিচ্ছিন্ন সার্ভিসের ক্ষেত্রে  প্রতিবন্ধক হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ